স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জনসভা হয় যশোরে ১১ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল

আজ ঐতিহাসিক ১১ ডিসেম্বর।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জনসভা হয় যশোরে ১১ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সাল

১১ ডিসেম্বর, জাতীয় জীবনের স্মরণীয় একটি দিন। শুধু যশোর নয়, দেশবাসীর জন্যে এই দিনটি গৌরবের। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কবলমুক্ত বাংলাদেশের মাটিতে এই দিনে যশোর টাউন হল ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় বিজয় সমাবেশ। মুক্ত বাংলার প্রথম এই জনসভায় প্রবাসী সরকারের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গতাজ তাজউদ্দিন আহমদ সমবেত জনতার উদ্দেশে বলেছিলেন, “আর ধ্বংস নয়, যুদ্ধ নয়। এই মুহূর্তে কাজ হল যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে গড়ে তোলা।” তিনি সর্বস্তরের মানুষকে স্বাধীনতা যুদ্ধের চেতনায় দেশ পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ফণীভূষণ মজুমদার, রওশন আলী, মোশাররফ হোসেন, তবিবর রহমান সরদার, এম আর আকতার
মুকুল ও জহির রায়হান।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী যশোরের তৎকালীন ডিসি ওয়ালি উল ইসলাম এবং কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাঞ্চন ঘোষালকে নির্দেশ দেন, আইন শৃঙ্খলায় যেন অবনতি না ঘটে। একই সাথে জনতাকে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধী যেই হোক, তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করবেন। তাজউদ্দিন আহমদ বলেছিলেন, স্বাধীন এই দেশে ধর্ম নিয়ে আর রাজনীতি চলবে না। আর তাই জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো। এই জনসভা যখন হয় তখন যশোরের আশপাশে যুদ্ধ চলছিল। জনসভা শেষে তিনি সড়ক পথে কোলকাতা চলে যান।

মুক্ত স্বদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম এ জনসভার খবর সংগ্রহের জন্য উপস্থিত ছিলেন লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকার সাংবাদিক পিটার গিল, নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকার সিডনি এস এইচ সানবার্গ, বালটিমোর সান পত্রিকার প্রতিনিধি, ওয়াশিংটন পোস্ট’র প্রতিনিধিসহ বহু বিদেশি সাংবাদিক।

এর আগে যশোর শহর থেকে হানাদার বাহিনী ৬ ডিসেম্বর দুপুর থেকেই শহর ছাড়তে থাকে। তারা বুঝতে পেরেছিল- পরাজয় সুনিশ্চিত। তখন তারা গ্রহণ করে পোড়ামাটি নীতি। চালাতে থাকে পাইকারী হারে হত্যা, ধবংস ও নাশকতামূলক কাজ। ৭ ডিসেম্বর ভোররাতে ৮ নং সেক্টরের অধিনায়ক মেজর মঞ্জুর মিত্র বাহিনীর নবম ডিভিশনের কমান্ডার মেজর জেনারেল দলবীর সিং যশোরে প্রবেশ করেন। এরপর ১১ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ জনশূন্য যশোর শহরে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেন।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার রাজেক আহমেদ বলেন, ১১ ডিসেম্বরের যশোরের এই সমাবেশ জাতীয় জীবনের একটি স্মরণীয় দিন। তিনি বলেন সমাবেশ আয়োজনের দায়িত্ব পালন করেছিলাম আমি।
যুদ্ধকালীন বৃহত্তর যশোরের মুজিববাহিনীর উপপ্রধান মুক্তিযোদ্ধা রবিউল আলম বলেন, ২ সহস্রাধিক লোকের ঐ সমাবেশে আমি নিজেও উপস্থিত ছিলাম। ৬ ডিসেম্বরের পর মানুষ তখন গ্রাম থেকে শহরে আসতে শুরু করেছে । চারদিকে বিজয়ের উল্লাস আর থেকে থেকে জয়বাংলা শ্লোগান এখনো কানে ভেসে আসছে। সে ছিল একদিকে হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসস্তুপের করুণ কাহিনী আর অপরদিকে বিজয় অর্জনের মধুর স্মৃতির ইতিহাস।

[বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর পেইজ থেকে সংগ্রহকৃত]

Post a Comment

2 Comments

  1. Buy Accutane Online From Canada https://agenericcialise.com/ - cialis online reviews Viagra Cialis Farmaci buying cialis online usa Online Lasix

    ReplyDelete
  2. Buy Drugs PreenceAgecy https://ascialis.com/# - cialis coupon Snikip Levitra Dispersion Bucal boidomak buy cialis usa Drokbersebra cheap cialis without prescription

    ReplyDelete